শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১০:০৯ অপরাহ্ন
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা )প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী পরিবারের পৈত্রিক জমি দখল করতে না পেরে সাবেক এক মন্ত্রীর মদদে আওয়ামী লীগ ও হকার্স লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের কালিন্দী ইউনিয়নের দেওশুর এলাকায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন সোহেল ও নাসির উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন সোহেল বলেন, পাঁচ দশক আগে আমার বাবা সাহেদ আলী ওরফে শাহু বেপারী আমার চার বোন, দুই ভাই ও মায়ের নামে ভিন্ন ভিন্ন রেজিষ্ট্রি করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন ব্রাক্ষনকিত্তা মৌজায় ৬৬৯ শতাংশ জমি কেনেন। পরবর্তীতে ওই জমির নিরাপত্তায় চারদিকে পাকা সীমানা দেয়াল নির্মাণ করি।
স্বৈরাচার সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ঢাকা-২ আসনের সাবেক সাংসদ কামরুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, মো. শাহাবুদ্দিন, আওয়ামী হকার্স লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই মো. সুমন, মো. সুজন ও মো. রাসেল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা জমি দখল করতে না পেরে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা আমাদের জমিতে জোরপূর্বক “সোনার বাংলা গ্রিন সিটি” নামক অবৈধ আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলেন। এসময় আমরা বাঁধা দিতে গেলে আমাদের কাছে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাদের হত্যা ও গুমের হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ভূমিদস্যুদের কবল থেকে পরিত্রাণ পেতে আমরা গত ১ এপ্রিল ঢাকা জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। বিষয়টি জানতে পেরে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে আনোয়ার হোসেন আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আবারও প্রাণ নাশের হুমকি দুমকি দেন। পরবর্তীতে আমরা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ৫ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
সালাউদ্দিন সোহেল আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকায় আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েও রেহাই পাইনি। এরপরও সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও দোসর ইউসুফ আলী, আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও তার ভাইয়েরা আমাদের জমিতে বালু ভরাট করে। এরপর সেখানে তারা প্লট তৈরি করে অবৈধভাবে ”ইউরো বাংলা গ্রিন সিটি” নামক আবাসন ব্যবসায়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে জমি বিক্রি করার চেষ্টা করছে।
এতে করে সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারণার স্বীকার না হয় সেজন্যে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জনসাধারণকে অবহিত করছি। এখন দেশে নিরপেক্ষ সরকার রয়েছে। তাই আমরা ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আশা করছি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আমাদের বৈধ জমি উদ্ধারে আমাদের সহযোগিতা করবেন। এ ছাড়া যেসব আওয়ামী লীগ নেতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমাদের কাছে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে অন্যথায় আমাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।